হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা এক মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী ও তাঁর ভাই আলিসান চৌধুরী।
আজ রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরোজা হক তানিয়ার আদালতে তাঁরা আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী তুহিন হাওলাদার বলেন, গত ১৬ মার্চ বাদী মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে যা বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঘটনাটি পুরো সাজানো। আসামিদের সঙ্গে বাদীর কোনো পূর্বপরিচয় নেই। কোনো দিন দেখা–সাক্ষাৎ হয়নি। এমনকি তাঁদের মধ্যে ফেসবুকে যোগাযোগও নেই। মেহজাবীন একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। অভিনয়জগতে তাঁর প্রতিপক্ষ থাকতে পারে। প্রতিপক্ষ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে লাভবান হওয়ার জন্য এই মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেছেন বাদী। মামলার যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে বাদী থাকেন না। আবার আসামি হিসেবে মেহজাবীন ও তাঁর ভাইয়ের যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানেও তাঁরা থাকেন না। আসামিরা তাঁদের বিরুদ্ধে সমন জারি হওয়ার বিষয়টি জানতেন না। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেন।

চলতি মাসের ৩ তারিখে মেহজাবীন ও তাঁর ভাইয়ের আদালতে হাজির হওয়ার তারিখ ধার্য ছিল। তবে তাঁরা সেদিন আদালতে হাজির না হওয়ায় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরোজা হক তানিয়া তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আজকে তাঁদের গ্রেপ্তার–সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপর তাঁরা সন্ধ্যায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে আদালত তা মঞ্জুর করেন।

জামিন পেয়ে বাসায় ফেরার পথে মেহজাবীন হোয়াটসঅ্যাপে লিখিত বার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি অনলাইনে সংবাদটি প্রকাশের পর বিষয়টি জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গে আমার আইনজীবীকে জানাই, তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। আইনজীবী আমাকে জানান, একজন লোক কোনো ভুয়া ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, যিনি সম্ভবত আমার পরিচয় ব্যবহার করেছিলেন—এই মুহূর্তে এটুকুই আমি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি। পাশাপাশি, মামলার বাদী এবং তাঁর আইনজীবী—উভয়েরই বর্তমানে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমার আইনি টিম তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে, কিন্তু তাঁদের মোবাইল নম্বর বন্ধ। আমি কোনোভাবেই এই মামলার সঙ্গে যুক্ত নই এবং আমি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমি আমাদের দেশের আইন ব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখি। তাই আমি জামিনের জন্য আবেদন করেছি।’

মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদীর (আমিরুল ইসলাম) সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয় মেহজাবীনের। সেই সূত্রে মেহজাবীনের নতুন পারিবারিক ব্যবসার অংশীদার হিসেবে যুক্ত হতে ২৭ লাখ টাকা দেন তিনি। এরপর মেহজাবীন ও তাঁর ভাই দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেননি। ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু না করায় বাদী বিভিন্ন সময় টাকা চাইতে গেলে আজ দেব, কাল দেব বলে সময় পার করে আসছেন।

বাদীর অভিযোগ, এ বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি পাওনা টাকা চাইতে গেলে মেহজাবীন ও আলিসান ১৬ মার্চ বাদীকে হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে যেতে বলেন। সেখানে গেলে মেহজাবীন, তাঁর ভাইসহ অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজন অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন তাঁকে, মেরে ফেলার হুমকিও দেন। তখন বাদী বিষয়টি সমাধানের জন্য ভাটারা থানায় গেলে পুলিশ তাঁকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। তখন তিনি আদালতে মামলা করেন।


















