আদানির সঙ্গে চুক্তিতে স্বার্থবিরোধী ধারা মিলেছে, বাতিলে যেতে হবে আন্তর্জাতিক আদালতে

0
15
আদানি গ্রুপের সাথে বিদ্যুৎ চুক্তি

২০১৭ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগ্রহে আদানি গ্রুপের সাথে ১৪৯৮ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ চুক্তি করে বাংলাদেশ। অত্যন্ত গোপনীয় বজায় রেখে এই চুক্তিটি সই করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

চুক্তিতে বলা হয়, ন্যূনতম চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না নিলেও বাংলাদেশকে খরচ দিতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে মানের কয়লাই ব্যবহার করা হোক না কেন, আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী ভালো মানের দাম পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া ভারত অংশের সঞ্চালন লাইনের পুরো খরচও বাংলাদেশ বহন করবে বলে উল্লেখ করা হয়।

চুক্তিটিতে দেশের স্বার্থবিরোধী এমন অসংখ্য ধারা খুঁজে পেয়েছে এ সংক্রান্ত পর্যালোচনা কমিটি। চুক্তিটির বৈধতা নিয়ে করা একটি রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এই কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। চলতি মাসের মধ্যেই কমিটির প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে।

পর্যালোচনা কমিটির সদস্য ড. জাহিদ হোসেন, চুক্তিটির পুরো সুবিধা ভোগ করছে আদানি গ্রুপ। সরকার একতরফাভাবে এটি বাতিল করতে পারে। তবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে।

এদিকে অসম এই চুক্তিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে সাধারণ মানুষ। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, চুক্তিটি আর্থিক বা রাজনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে হয়ে থাকতে পারে। এটি বাতিল করতে আন্তর্জাতিক আদালতের মুখোমুখি হতে হবে। তবে চুক্তির অনিয়মের প্রমাণ করা গেলে বিচারে জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

জ্বালানি ও টেকসই উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, এক্ষেত্রে প্রথম সালিশে হয়তো হেরে যাব। এরপর আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে আদালতকে বিষয়টি বোঝাতে পারলে মামলায় জেতা সম্ভব।

এ বিষয়ে ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এই চুক্তির পেছনে দুর্নীতি রয়েছে এমনটা প্রমাণ করা গেলে পরিস্থিতি বদলে যাবে। তবে প্রমাণগুলো আদালতের গ্রহণযোগ্য হতে হবে। যদিও প্রমাণ বের করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য হবে।

কারো কারো মতে রাষ্ট্রের দোহাই দিয়ে কোন ব্যক্তি বা দল যেকোনো অন্যায় চাপিয়ে দিতে পারে না। জনগণের ক্ষতি বিবেচনায় প্রয়োজনে সরকারের বিরুদ্ধে মামলার কথা জানান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ সভাপতি অধ্যাপক শামসুল আলম।

তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে ক্যাব। বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকারের কাছে কিছু প্রত্যাশা করে লাভ নেই। কমিটি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।

অপরদিকে, অন্য চুক্তিগুলোতে বিল পরিশোধে বিলম্ব হলে ১৫ শতাংশ সুদ দেয়ার শর্ত না থাকলেও আদানির চুক্তিতে তা রয়েছে। সেই শর্ত কাজে লাগিয়ে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ দাবি করছে গ্রুপটি।

রাসেল আহমেদ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.