আর্জেন্টিনার সর্বদক্ষিণের উশুয়াইয়াহ বন্দর ছেড়ে এমভি প্ল্যানসিয়াসের অবস্থান এখন দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে। ১১২ অভিযাত্রী নিয়ে পর্যটকবাহী জাহাজটি ছুটছে অ্যান্টার্কটিকা পানে। এরই মধ্যে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের তিনটি দ্বীপে নেমেছেন অভিযাত্রীরা। তাঁরা কাছ থেকে দেখেছেন পেঙ্গুইনসহ দ্বীপবাসী নানা প্রজাতির পাখি ও প্রাণী। এই অভিযাত্রীদের মধ্যে আছেন ২৭ বাংলাদেশি।
বাংলাদেশি ২৭ অভিযাত্রীর ১৩ জন গেছেন দেশ থেকে, অন্যরা প্রবাসী বাংলাদেশি। তাঁরা দলে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ওমান ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আর্জেন্টিনায় এসে, যাঁদের মধ্যে ১০ জন নারী। দলটির কনিষ্ঠতম সদস্য ১১ বছরের জারিতা। সে মা-বাবার সঙ্গে যাচ্ছে। নানা পেশা ও বয়সের এই অভিযাত্রীরা প্রতিনিধিত্ব করছেন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা।
২৭ জনের দলের সঙ্গে দ্বিতীয়বার অ্যান্টার্কটিকায় যাচ্ছেন লেখক ও পাখিবিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক। আছেন পর্যটক তারেক অণু ও তানভীর অপু। আজ বাংলাদেশের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০ ডিসেম্বর সকালে নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি গ্রুপ ছবি পোস্ট করে তারেক অণু লিখেছেন, ‘অ্যান্টার্কটিকার পথে ২৭ জন বাংলাদেশি (সবাই অবশ্য ছবিতে নেই)। …১১ থেকে ৮০—সকল বয়সের নানা পেশার, কিন্তু ভ্রমণের নেশায় আক্রান্ত সকলেই। এমন ভ্রমণ এর আগে হয়নি, কোনো দিন হবে কি না কে জানে।’
অভিযাত্রী দলের সদস্য হুমায়রা মোস্তাফা বলেন, ‘আমরা একটি দীর্ঘ সফরে বেরিয়েছি। দারুণ অভিজ্ঞতা হচ্ছে। বিভিন্ন দ্বীপে থামছি, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে ধারণা হচ্ছে। এর আগে বাংলাদেশি যাঁরা গেছেন, সবাই বেজক্যাম্প ট্রিপে (এই প্যাকেজে গেলে অ্যান্টার্কটিকায় ক্যাম্পিং, হাইকিং, কায়াকিংয়ের মতো নানা রোমাঞ্চকর কার্যক্রমে অংশ নেওয়া যায়) গেছেন।’
পর্যটক তানভীর অপু প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি ঐতিহাসিক ঘটনা। বিছিন্নভাবে আগে কয়েকজন বাংলাদেশি অ্যান্টার্কটিকায় ভ্রমণ করেছেন। তবে একসঙ্গে এত বাংলাদেশির অ্যান্টার্কটিকা-যাত্রা এবারই প্রথম।’
অভিযাত্রীরা ৬ ডিসেম্বর উশুয়াইয়াহ বন্দর থেকে জাহাজে ওঠেন। ২১ দিনের অভিযান শেষে একই বন্দরে ফিরবেন ২৫ ডিসেম্বর। অভিযানে বরফঢাকা মহাদেশের নানা প্রান্ত দেখার পাশাপাশি ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ ও দক্ষিণ জর্জিয়া দ্বীপে থামবেন তাঁরা।
সজীব মিয়া