গত বছরের জুনে মেলিলা ছিটমহলসংলগ্ন সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মৃত্যুর ঘটনা স্পেন ও মরক্কো যথাযথভাবে তদন্ত করতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটির দাবি, দেশ দুটি তাদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে।
আজ শুক্রবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড এসব অভিযোগ করেন।
২০২২ সালের ২৪ জুন আফ্রিকার সাব সাহারা অঞ্চলের প্রায় দুই হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ও শরণার্থী মরক্কো থেকে উত্তর আফ্রিকায় স্পেন নিয়ন্ত্রিত মেলিলা ছিটমহলে ঢোকার চেষ্টা করেন। অ্যামনেস্টির হিসাব অনুযায়ী, ওই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে কমপক্ষে ৩৭ জন মারা যান, এখনো নিখোঁজ ৭৬ জন।
স্পেনের ছিটমহলে ঢোকার পথে ১৮ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু
মরক্কোর দাবি, সীমান্ত বেড়া থেকে পড়ে গিয়ে ২৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। আর স্পেন কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের ভূখণ্ডের ভেতর কারও মৃত্যু হয়নি।
অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, মেলিলায় ওই হত্যাকাণ্ডের এক বছর হতে চলল। স্পেন ও মরক্কোর কর্তৃপক্ষ শুধু দায় অস্বীকার করেই ক্ষান্ত দিচ্ছে না, সত্য উদ্ঘাটনের প্রচেষ্টাকেও তারা থামিয়ে দিচ্ছে।
অ্যামনেস্টি বলছে, স্পেন ও মরক্কোর কর্তৃপক্ষ ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের মরদেহ স্বদেশে ফেরত পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নিহত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা এবং তাঁদের মৃত্যুর কারণ কী, তা-ও প্রকাশ করা হয়নি।
মানবাধিকার সংগঠনটির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড মনে করেন, মেলিলার ঘটনা থেকে শিক্ষা না নিলে সীমান্তে প্রাণহানি, সহিংসতা ও দায়মুক্তির ঘটনা চলতেই থাকবে।
স্পেনের অ্যাটর্নি জেনারেল মেলিলার ঘটনাটি তদন্ত করেছেন। তবে তিনি এ ঘটনায় স্পেনের কোনো কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করেননি। তাঁর মতে, ওই কর্মকর্তারা ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত নন। এ নিয়ে একটি সংসদীয় তদন্তেরও দাবি জানানো হয়েছিল। তবে স্পেনের আইনপ্রণেতারা সে প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
মরক্কো-স্পেন সীমান্তে দুই দেশের কর্তৃপক্ষ যে ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে থাকে, তা নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সমালোচনা করে থাকে।
স্পেনের সরকারি আইনজীবীরা বলছেন, নিজেদের মামলার নিষ্পত্তি না করে যাঁরা সীমান্ত বেড়ার ওপর দিয়ে লাফ দিয়েছিলেন, তাঁদের ফেরত পাঠিয়েছে তাঁর দেশ।
স্পেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক মুখপাত্র বলেন, তাঁর দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল অত্যন্ত গভীর ও নিখুঁতভাবে তদন্তটি করেছেন।
মরক্কো কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।