মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আজ রোববার সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাঁরা মুক্তি পান।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার (ভারপ্রাপ্ত) সুভাষ কুমার ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ বিকেল পাঁচটার দিকে আদিলুর ও নাসিরের জামিন আদেশ কারাগারে পৌঁছায়।
কারাগার থেকে বেরিয়ে আদিলুর বলেন, ‘আমরা ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম করেছি। ন্যায়ের জন্য আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
এক দশক আগে করা তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের (আইসিটি) ৫৭ ধারার মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও নাসিরকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাঁদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ১ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই সময় তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
রায়ের বিরুদ্ধে আদিলুর ও নাসিরের করা আপিল ১০ অক্টোবর শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জরিমানা স্থগিত করে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এর আগে ৭ অক্টোবর আদিলুর ও নাসিরের সাজা বাড়ানোর জন্য হাইকোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান নিয়ে অসত্য-বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগে আদিলুর ও নাসিরের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ মামলায় আদিলুর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গ্রেপ্তার হন।
পরে তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ওই বছরের ১১ আগস্ট আদালতের অনুমতি নিয়ে অধিকারের কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে দুটি কম্পিউটার ও দুটি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। সে বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, আদিলুর ও নাসির ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেন, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেন। মামলায় আইসিটি আইনের ৫৭(২) ধারায় ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি আদিলুর ও নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
আদিলুর ও নাসিরের কারাদণ্ডের ঘটনায় দেশ ও বিদেশ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এক বিবৃতিতে বলেছিল, তারা আদিলুর ও নাসিরের বিরুদ্ধে দণ্ডাদেশের মামলা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।